কুমিল্লা টাউন হল সুপারমার্কেট শতকোটির সম্পদ টানা ৩২ বছর ভোগদখল বাহারেরমার্কেট কমিটির একাধিক নেতা জানান, টাউন হল সুপারমার্কেটের নিচতলায় ১০০টি দোকান রয়েছে। শুরুতেই বাহার এসব দোকানের পজেশন বিক্রির নামে ৩০ হাজার টাকা করে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। বর্তমানে প্রতি দোকান থেকে তিনি ১ হাজার টাকা করে প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা ভাড়া নিচ্ছেন। দ্বিতীয়তলায় রয়েছে ৪২টি দোকান। বাহার এগুলো নিজের আয়ত্তে রেখে ৫ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত পজেশন বিক্রি করে প্রায় ৬ কোটি টাকা নিয়েছেন। এসব দোকান থেকে প্রতি মাসে এক শাটারে ১ হাজার ৬০০ ও দুই শাটারের জন্য ৩ হাজার ২০০ টাকা করে ১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা নিচ্ছেন।
তৃতীয় ও চতুর্থতলায় রয়েছে বাহারের মেয়ে সোনালীর নামে আবাসিক হোটেল। সেখানে ছোট-বড় ২৮টি রুম আছে, যা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে প্রতি মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা বাহারের পকেটে যাচ্ছে। বাহারের প্রতিষ্ঠান মেসার্স কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট সাপ্লাইয়ারের রসিদে দোকানের ভাড়ার টাকা তোলা হয়। এভাবে প্রতি মাসে আবাসিক হোটেল ও দোকানের ভাড়া বাবদ প্রায় ১৭ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেন বাহার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাউন হল কমিটির একজন সদস্য জানান, এ মার্কেট থেকে সাবেক এমপি বাহার প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ টাকা নিলেও টাউন হলের অ্যাকাউন্টে জমা দেন মাত্র ২২ হাজার ৫০০ টাকা। তিনি টাকার পাহাড় বানালেও অর্থের অভাবে টাউন হলটির পাঠাগারের চেয়ার কেনা যায় না। বিদ্যুৎ বিল ও কর্মচারীর বেতনও দেওয়া যায় না।
সম্প্রতি টাউন হল সুপারমার্কেটের দোকানদারদের একটি প্রতিনিধি দল কুমিল্লার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাতের পরই গণপাঠাগারের অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসের ভাড়ার টাকা জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার বলেন, দোকানদের কাছে পজেশন কেনার বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। এতদিন মুখে মুখে সব চলছিল। এখন থেকে গণপাঠাগারের অ্যাকাউন্টে ভাড়ার টাকা জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বীরচন্দ্র নগর মিলনায়তন ও গণপাঠাগার পরিচালনায় টাউন হল মিলনায়তনে অতিরিক্ত সাধারণ সভা হয়। এ সভায় আগের কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রক্ষাসহ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
তিনি আরও জানান, বীরচন্দ্র গণপাঠাগারের উন্নয়নে জেলা পরিষদ থেকে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। টাউন হল ভবনটির ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে স্থাপত্য পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। পুনঃসংস্কার করে ৫০ বছর আগে দরজা-জানালা যেভাবে ছিল, সেভাবে তৈরি করে নতুন রূপে সাজানো হবে।

Post a Comment