Top News

আ. লীগ নেতা ও তার স্ত্রীর তিন দেশে ৫৮০টি অ্যাপার্টমেন্টের অনুসন্ধান

DAILYNEWS.ORG
আ. লীগ নেতা ও তার স্ত্রীর তিন দেশে ৫৮০টি অ্যাপার্টমেন্টের অনুসন্ধান
সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তার স্ত্রী রুখমিলা জামানের যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত মোট ৫৮০টি অ্যাপার্টমেন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। আরও অবৈধ সম্পদের খোঁজ করছে দুদক অনুসন্ধান টিম।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, এসব সম্পদ ও পাচারকৃত টাকা যাতে অন্যত্র হস্তান্তর না হয়, সেজন্য দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর অনুসন্ধানে এ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি অ্যাপার্টমেন্ট, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি এপার্টমেন্টের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের সম্পদের খোঁজে আরও অনুসন্ধানে তথ্য চাওয়া হয়েছে অন্যান্য দেশে।

দুদক এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যাংকে করা অ্যাকাউন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনবিহীন মানিলন্ডারিং এর মাধ্যমে টাকা পাচার, আয়কর নথিতে সম্পদের তথ্য গোপনসহ বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য পেয়েছে।দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রাথমিক তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং তার স্ত্রী রুখমিলা জামানের বিরুদ্ধে। ২০১৫ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মাত্র ৯ বছরে মানিলন্ডারিং এর মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ পাচার করে তিনি (জাবেদ) ও তার স্ত্রী রুখমিলা জামান এসব স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন।

দুদক সূত্র আরও জানায়, সংশ্লিষ্ট দেশের ল্যান্ড রেজিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, জাবেদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের মাধ্যমে অ্যাপার্টমেন্টসহ অন্যান্য সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়েছে দুদক। এসব টাকা বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অনুমোদন নেই। আয়কর নথিতে বিদেশে সম্পদ অর্জনের কোনো তথ্য নেই। জাবেদ ও তার স্ত্রী ছাড়াও পরিবারের অন্যান্য সদস্য কিংবা আত্নীয়স্বজনের নামে কোন সম্পদ আছে কিনা তাও অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এরূপ কিছু পাওয়া গেলে তা তদন্তে অর্ন্তভুক্ত করা হবে।

দুদক ইতোমধ্যে মানিলন্ডারিং এর মাধ্যমে বিদেশে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের স্বার্থে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুখমিলা জামানের নামে-বেনামে বিভিন্ন দেশে অর্জন করা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক বা অবরুদ্ধ করার আদেশ ও অনুমতি চেয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে আবেদন (পারমিশন পিটিশন নং ৪৫৩/২০২৪) করেছে।দুদক একই সময়ে সাইফুজ্জামান ও রুখমিলার নামে বা তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা ব্যাংক হিসাবের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে হিসাব অবরুদ্ধের আবেদন জানিয়েছে।

দুদক অনুসন্ধান টিমের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা অগ্রসর হচ্ছি। দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। আশা করছি, সবকিছু গুছিয়ে আইনের আওতায় আনতে পারবো।

দুর্নীতি দমন কমিশন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুখমিলা জামানের বিদেশে অবৈধভাবে অর্জন করা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি তদন্তের জন্য দুদকের উপ-পরিচালক রাম প্রসাদ মন্ডলকে টিম লিডার করে ৩ সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মাইনুদ্দিন ও উপ সহকারী পরিচালক মো. জুয়েল রানা। কমিশনে বিগত ১৪ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় সাইফুজ্জামান ও রুখমিলার বিদেশে অর্জিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধের জন্য আদালতের আদেশ প্রার্থনার অনুমতিও অনুমোদন দেওয়া হয়।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, আদালত দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে অনুমতি দিয়ে স্থাবর সম্পদের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের এইচ এম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি ডিপার্টমেন্ট, ইংল্যান্ড ও ওয়েলস; সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ল্যান্ড ডিপার্টমেন্ট; যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট রেজিস্ট্রার নিউইয়র্ক ও ফ্লোরিডা-কে অবহিত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছে।

এছাড়াও আদালত আরব আমিরাতের তিনটি ব্যাংক শাখায় খোলা ৪টি অ্যাকাউন্টসহ অন্যান্য অ্যাকাউন্টের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংকের মানিলন্ডারিং বিভাগ, বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটসহ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করার জন্য দুদকের তদন্ত টিমকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এ পর্যন্ত পাওয়া বিভিন্ন দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে,সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ইসলামী ব্যাংক ও ফাস্ট আবুধাবি ব্যাংক, জনতা ব্যাংক আরব আমিরাত শাখা ও টিডি ব্যাংক, ইউএসএ রয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি বাংলাদেশি ব্যাংকসহ তিনটি ব্যাংক শাখায় ৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছে দুদক। এর মধ্যে বাংলাদেশি জনতা ব্যাংক পিএলসি আরব আমিরাত শাখাও রয়েছে। অপর দু’টি ব্যাংক হচ্ছে দুবাই ইসলামিক ব্যাংক ও ফাস্ট আবুধাবি ব্যাংক। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে খোলা এই ৪টি ব্যাংক এর তথ্যে দেখা গেছে, দুবাই ইসলামিক ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ৮ জানুয়ারি, ২০১৫ সালে। অ্যাকাউন্ট নং- ০৬৫৫৮০০৭২৯০৬৩০১। এই অ্যাকাউন্টে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৯৫ দিরহাম জমা হয়েছে। বর্তমানে জমা রয়েছে ৪২ হাজার ১৫ দিরহাম। ফাস্ট আবুধাবি ব্যাংকে দু’টি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এর একটি অ্যাকাউন্ট নং- ১৬১১০০৩৯৩৪৩৫৮০১০। এই অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ৩১ জানুয়ারি, ২০১৭ সালে। এই অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে ৯ লাখ ৮২ হাজার ৫৪৬ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ কোটি টাকা। উত্তোলন করা হয়েছে ৯ লাখ ৮১ হাজার ৪৮৬ মার্কিন ডলার। ফাস্ট আবুধাবি ব্যাংকে উপরোক্ত অ্যাকাউন্ট খোলার ৭ মাস পর একই ব্যাংকে আরও একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। একই ব্যাংকের অপর অ্যাকাউন্ট নং- ১৬৫১০০৩৯৩৪৩৫৮০২৫। এই অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ২৪ আগস্ট, ২০১৭ সালে। এই অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে ৩২ লাখ ৭০ হাজার ৯৭৯ দিরহাম। বর্তমানে জমা রয়েছে ৩৪ হাজার ৭৯৪ দিরহাম। জনতা ব্যাংক আরব আমিরাত শাখায় ৩ আগস্ট, ২০২৩ সালে খোলা অ্যাকাউন্ট নাম্বার- ১৭০৩১৯৩৩১০০১০১০০০২৫৯৯। এই অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে ৪৯ লাখ ৫১ হাজার ৩৭৭ দিরহাম। উত্তোলন করা হয়েছে ৪৯ লাখ ৪৬ হাজার ৫৮৮ দিরহাম। বর্তমানে অ্যাকাউন্টের স্থিতি হচ্ছে ৪ হাজার ৭৮৯ দিরহাম।এছাড়া আমেরিকান টিডি ব্যাংকে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন ‘জেডটিএস প্রপার্টিজ এলএলসি’ নামে খোলা বেনিফিশিয়ারি অ্যাকাউন্টে (নং-৪৩৭২২৯৫৮১০) ২০২১ সালের ২ এপ্রিল থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ৪ মাসে ২,০০,২০৬.৭২ মার্কিন ডলার জমা হয়েছে। এসব ডলার ট্রান্সফার হয়েছে হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিংয়ে খোলা ক্যাপিটেল ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম লিমিটেড এবং ফাস্ট আবুধাবি ব্যাংকে খোলা সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অ্যাকাউন্ট থেকে।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২৯ জুলাই, ২০২১ সালে একই দিনে হংকং সাংহাই ব্যাংকিং এর ক্যাপিটাল ওয়ার্ল্ড ও ফাস্ট আবুধাবি ব্যাংকের সাইফুজ্জামানের অ্যাকাউন্ট থেকে আমেরিকান টিডি ব্যাংকে স্থানান্তর হয়েছে ৫০,৯১০.১৮ মার্কিন ডলার। এর তিন দিন আগে ২৬ জুলাই ফাস্ট আবুধাবি ব্যাংক থেকে স্থানান্তর হয়েছে ৮,৯৬০ মার্কিন ডলার। সাংহাই হংকং ব্যাংকিং এর অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২১ সালের ১ জুলাই ৩৪,৬৫০.৮৭ মার্কিন ডলার, ১৯ এপ্রিল ৪৮,৮৫১.৯৫ মার্কিন ডলার এবং ২ এপ্রিল ৫,৬৮৩.৭২ মার্কিন ডলার টিডি ব্যাংকে স্থানান্তর হয়েছে।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং রুখমিলা জামানের নামে প্রতিষ্ঠিত ১০টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য পেয়েছে দুদক। এর মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ৮টি এবং তার স্ত্রী রুখমিলা জামানের নামে ২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।সাইফুজ্জামানের নামে প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে জেডটিএস প্রপার্টিজ লিমিটেড (লাইসেন্স নং- ১০০১০৬০৮, তাং- ১৭-০২-২০১৬), জেবা ট্রেডিং এফজেডই (লাইসেন্স নং- ৫০১১৫৬৭, তাং- ১৮-২-২০১৫ইং), নিউ ভেনচার (লন্ডন) লিমিটেড (লাইসেন্স নং- ০৭৩১২২৫৭, তাং- ৩১-০৭-২০১০), সাদাকাত প্রপার্টিজ লিমিটেড (লাইসেন্স নং- ১৩৫২৫১০৭, তাং- ২২-০৭-২০২১), জেবা প্রপার্টিজ লিমিটেড (লাইসেন্স নং- ১৩৪৬৭১৭২, তাং- ২১-০৬-২০২১), আরামিট প্রপার্টিজ লিমিটেড (লাইসেন্স নং- ১২৫৮৯৮৬৯, তাং- ০৬-০৫-২০২০), জারিয়া প্রপার্টিজ লিমিটেড (লাইসেন্স নং- ১৩৪৬৭৫৩২, তাং ২১-০৬-২০২১), জেডটিজেড প্রপার্টি ভেনচার্স লিমিটেড (লাইসেন্স নং- ১২৭০১১৮, তাং- ৩০-০৭-২০২০)। রুখমিলা জামানের নামে দু’টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে রুখমিলা প্রপার্টিজ লিমিটেড (লাইসেন্স নং- ১২০৮৯৫৬৪, তাং- ০৬-০৭-২০১৯) এবং আর এফ এক্যুইজিশনস লিমিটেড (লাইসেন্স নং- ১৫৮১৯৫৮৯, তাং- ০৪-০৭-২০২৪)।

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ভূমি মন্ত্রী থাকার সময় মানিলন্ডারিং এর মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার করে বিদেশে বিত্ত-বৈভব অর্জন ও অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছে সাবেক ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী (জাবেদ) ও তার স্ত্রী রুখমিলা জামান।

চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মী আকতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর পুত্র সাইফুজ্জামান চৌধুরী। যিনি পরিবার ও নিজ নির্বাচনী এলাকায় জাবেদ নামে বহুল পরিচিত। জাবেদ ব্যবসায়ী পিতার হাত ধরে ব্যবসায় মনোনিবেশ করে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা নির্বাচিত হয়ে পরিচিতি লাভ করেন। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। পিতার অবর্তমানে ছিলেন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান। পিতা আকতারুজ্জামান চৌধুরী মৃত্যুবরণ করলে পিতার শূন্য আসনে দলীয় মনোনয়ন দেন ফুফু শেখ হাসিনা।শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহচর আকতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু। শেখ হাসিনা আখতারুজ্জামানকে ‘বাবু ভাই’ বলে সম্বোধন করতেন। সেই হিসাবে শেখ হাসিনা হয়ে উঠেন সাইফুজ্জামানের ফুফু। এই ফুফু-ভাতিজার সম্পর্কের রসায়ন আনুকুল্য পায় চট্টগ্রামের সংসদীয় আসন-১৪, আনোয়ারা আসনে। চট্টগ্রামের আনোয়ারা সংসদীয় আসনে ঝানু রাজনীতিকদের হারিয়ে প্রথমবারের মতো মুজিব কোট গায়ে তুলে দলীয় কাজে নেমে পড়েন পিতার উত্তরাধিকার হিসাবে। জয়ও ছিনিয়ে নেন। পরবর্তীতে সাইফুজ্জামান জাবেদ প্রথমে ভূমি প্রতিমন্ত্রী এবং পরে ভোটারবিহীন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এরপর অবৈধ টাকার ভাগ্যের আকাশে উড়তে থাকে জাবেদ। ভূমি মন্ত্রী হয়ে ভূমির লোভে পড়েন জাবেদ। ডানা মেলেন বিদেশের মাটিতে। ভূমি ও অ্যাপার্টমেন্ট অর্জনের লোভ দেশের মাটি ছাড়িয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন পছন্দনীয় জায়গায় নোঙর করে। ভূমি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জাবেদ ইউসিবি পিএলসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং তার স্ত্রী রুখমিলা জামান ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে স্বামীর স্থলাভিষিক্ত হন।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিশ্বের আলোচিত স্থান সংযুক্ত আরব আমিরাতের বুর্জ খলিফায় অ্যাপার্টমেন্টের সংখ্যা ১৫টি। এর মধ্যে সিটি সেন্টার রেসিডেন্সেই আছে ৮টি। যার ৭টি ক্রয় ও রেজিস্ট্রি হয়েছে ২২ জুন, ২০২২ সালে। মে’এইজেম দ্যা ফাস্ট, আলদালুস-এ ৪১টি অ্যাপার্টমেন্ট। এর মধ্যে ৩৩টি রেজিস্ট্রি হয়েছে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে। নাদ আল সাবা এলাকার দ্যা পুলু রেসিডেন্সে-এ ২টি ভবনে ৩১টি অ্যাপার্টমেন্ট রেজিস্ট্রি হয়েছে ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। জাবল আলী এরিয়ার প্রিমিয়াম রেসিডেন্সে ২০টি অ্যাপার্টমেন্ট। এর ১৭টি রেজিস্ট্রি হয়েছে ২৭ জানুয়ারি, ২০২২। গালফ কমার্শিয়াল-এর পেনিনসুলা ও আরবান ওয়েসিসে ২০টি অ্যাপার্টমেন্ট, সানরাইজ লিজেন্ডে ১৫ অ্যাপার্টমেন্ট। এছাড়াও বার্শা সাউথ-এর এসমানা ওয়েভস, হিমালয় টাওয়ার, মিউডন ভিউজসহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ জায়গায় ২২৮টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরের আশপাশের বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় ৩৪৩টি এপার্টমেন্টের অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে জেডটিএস প্রপাটিস লিমিটেডের নামে ২৭৬টি, নিউ ভেঞ্চার (লন্ডন) লিমিটেডের নামে ২৩টি, জেবা প্রপাটিস’র নামে ১টি, সাদাকাত প্রপ্রাটিস লিমিটে ‘র নামে ৮টি এবং আরামিট প্রপাটিসের নামে ৩৫টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। অ্যাপার্টমেন্ট এলাকাগুলোর মধ্যে সেলফোর্ড, ১৮ ডকস্ট্রিট, ৭৮ স্টক রোড়, হেম্পডেন রো, আর্নিস্টন ওয়ে, আলবার্ট এমবেকমেন্ট, ডেটফোর্ড-কেন্ট, গ্রিনউইচ, সিটি নর্থ ইস্ট টাওয়ার, করসিকন স্কয়ার, গিলিংহাম, ওয়েলিংটন লিভারপুল, মিসিগান, এভারফিল্ডি ভিলেজ অন্যতম।

আমেরিকার ৯টি এপার্টমেন্টের মধ্যে ৮টি নিউইয়র্কে এবং ১টির অবস্থান ফ্লোরিডায়। নিউইয়র্কের ৭টি অ্যাপার্টমেন্টের ঠিকানাগুলো হলো- ৩০, ২৯নং স্ট্রিট রোড; ৫৯১, ৩নং এভিনিউ; ১০, মেলকম এক্স বুলভার্ড; ৯নং এভেনিউ, পোর্ট ইম্পেরিয়াল, নিউইয়র্ক। ফ্লোরিডার অ্যাপার্টমেন্টের ঠিকানা হচ্ছে ৩৮নং টেরেস রোড়, ওকালা ফ্লোরিডা-৩৪৪২০।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. কাজী আকতার হামিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, অপরাধ সম্পর্কিত বিষয়ে পারস্পরিক সহায়তা আইন, ২০১২ এর সেকশন ৮-এ বলা হয়েছে, অপরাধ অনুসন্ধান বা তদন্তে অন্য দেশকে অনুরোধ জানাতে পারবে। যদি দু’দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি নাও থাকে, তবু বিচারিক ও অন্যান্য কার্যধারা বিষয়ে কোন বিদেশি রাষ্ট্র কর্তৃক সহায়তা যাচনা করা হইলে এবং উক্ত অপরাধে ওই দেশের আইনে অপরাধ শাস্তিযোগ্য হইলে উক্ত বিষয়ে সর্বোত্তম পারস্পরিক সহযোগিতা দিতে হবে।

ড. আকতার হামিদ বলেন, উক্ত আইনের সেকশন-৯ এ বলা হয়েছে, যেসব দেশের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রয়েছে; সেসব দেশের কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী অনুরোধ করতে পারবে। যদি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি না থাকে সেক্ষেত্রে ডিপ্লোমেটিক চ্যানেলে এই অনুরোধ করা যেতে পারেতিনি আরও বলেন, মানিলন্ডারিং সব দেশেই অপরাধ। এক্ষেত্রে সম্পদ ক্রোক বা অবরুদ্ধ করতে হলে সংঘটিত অপরাধ সে দেশের আইনে যদি অবৈধ হয়, যদি সম্পদের আয়ের উৎস ও লিগ্যাল ফান্ড যথাযথভাবে দেখাতে না পারে তাহলে ওই দেশের আইন অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা যায়। আদালতের রায়ের সার্টিফাইড কপি এনে বাংলাদেশের আদালতে তা এক্সিকিউট (তামিল) করার আবেদন করা যায়। এক্ষেত্রে সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিভাগকে তৎপর হতে হবে।

বিদেশে অর্জিত সম্পদ ও মানিলন্ডারিং এর মাধ্যমে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যরিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, মানিলন্ডারিং বা অর্থ পাচার সারা বিশ্বের একটি সমস্যা। সারা বিশ্বের রাষ্ট্র কাঠামোতে মানিলন্ডারিং ফৌজদারী অপরাধ। প্রত্যেক দেশ এই অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে। তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ আইনী কাঠামোতেও এর প্রয়োগ রয়েছে। অথচ আর্ন্তজাতিকভাবে একটি দেশের সাথে অপর দেশের মানিলন্ডারিং অনুৎসাহিত করতে আইনের বলিষ্ঠ প্রয়োগ নেই। ফলে পাচার করা টাকা ফেরত আনতে অনিশ্চয়তায় থাকতে হয়।

ব্যারিস্টার কাজল বলেন, যেসব দেশের সাথে বাংলাদেশ সরকারের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি আছে, তাদের অনুরোধ করলে রেজাল্ট আসতে পারে। চুক্তির বাইরেও পারস্পরিক আস্থা ও সম্পর্কের উপর অনেক সমস্যার সমাধান নির্ভর করে। তবে তা নির্ভর করবে উভয় দেশের সরকারের সদিচ্ছার উপর। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়কে এর পেছনে সময় দিতে হবে। যে সব দেশে টাকা পাচার কিংবা সম্পদ গড়ে তোলা হয়েছে তা আইনের মধ্য দিয়েই দু’দেশের সরকারি উদ্যোগে ফেরানো সম্ভব। এতে অর্থ পাচার রোধে দু’দেশই বেনিফিশিয়ারি হবে।
. . . . Ten Unknown Facts About #BMW 1. Founding and History: BMW, Bayerische Motoren Werke AG, was founded in 1916 in Munich, Germany, initially producing aircraft engines. The company transitioned to motorcycle production in the 1920s and eventually to automobiles in the 1930s. 2. Iconic Logo: The BMW logo, often referred to as the "roundel," consists of a black ring intersecting with four quadrants of blue and white. It represents the company's origins in aviation, with the blue and white symbolizing a spinning propeller against a clear blue sky. 3. Innovation in Technology: BMW is renowned for its innovations in automotive technology. It introduced the world's first electric car, the BMW i3, in 2013, and has been a leader in developing advanced driving assistance systems (ADAS) and hybrid powertrains. 4. Performance and Motorsport Heritage: BMW has a strong heritage in motorsport, particularly in touring car and Formula 1 racing. The brand's M division produces high-performance variants of their regular models, known for their precision engineering and exhilarating driving dynamics. 5. Global Presence: BMW is a global automotive Company 6. Luxury and Design: BMW is synonymous with luxury and distinctive design, crafting vehicles that blend elegance with cutting-edge technology and comfort. 7. Sustainable Practices: BMW has committed to sustainability, incorporating eco-friendly materials and manufacturing processes into its vehicles, as well as advancing electric vehicle technology with models like the BMW i4 and iX. 8. Global Manufacturing: BMW operates numerous production facilities worldwide, including in Germany, the United States, China, and other countries, ensuring a global reach and localized production. 9. Brand Portfolio: In addition to its renowned BMW brand, the company also owns MINI and Rolls-Royce, catering to a diverse range of automotive tastes and luxury segments. 10. Cultural Impact: BMW's vehicles often become cultural icons.

Post a Comment

Previous Post Next Post